কুষ্টিয়ায় চালকলের বর্জ্যের দূষিত পানিতে সাত মাস ধরে বন্ধ স্বাস্থ্যকেন্দ্র


কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার খাজানগরে চালকলের বর্জ্যের পানিতে তলিয়ে গেছে একটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। যে কারণে দীর্ঘ সাত মাস ধরে বন্ধ রয়েছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। এই চিত্র দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর এলাকার। দেশ এগ্রো ও ইফাদ এগ্রো নামের দুটি চালকলের বিষাক্ত বর্জ্য ও দূষিত পানিতে তলিয়ে গেছে এই উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। এ কারণে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এখানকার হাজার হাজার মানুষ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পুরো এলাকাজুড়ে এখন বিষাক্ত বর্জ্য ও কচুরিপানায় ময়লার স্তূপে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি ৩ ০হাজার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র। সেটি এখন অনেকটাই পরিত্যক্ত ভবনে পরিণত হয়েছে।
পাশে কুষ্টিয়া-চুয়াডাঙ্গা সড়কের কুবুরহাট এলাকা দিয়ে চলাচলকারী হাজারও মানুষ বিষাক্ত পানির দুর্গন্ধে চলাফেরা করছেন নাকে রুমাল চেপে। ওই পানি গায়ে লেগে দেখা দিচ্ছে চর্মরোগসহ নানান অসুখ-বিসুখও। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, চালকল মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় সবাইকে ম্যানেজ করে চলে।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালকলের বিষাক্ত বর্জ্য ও দূষিত পানি দিয়ে তলিয়ে গেলেও কেউই এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই । চালকলের বিষাক্ত বর্জ্যে ও দূষিত পানিতে ইউনিয়নের কৃষি জমির ফসলও নষ্ট হচ্ছে। আশপাশ এলাকায় বসবাসকারী লোকজন চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই ওই পানি উঠে যাচ্ছে সড়কে। পানি গায়ে লাগলে দেখা দিচ্ছে চর্মরোগসহ নানা অসুখ-বিসুখও। নাম-প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কয়েকজন কর্মচারী জানান, আমরা এখানে চাকরি করি। চালকল মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় এ ব্যাপারে কথা বলতে গেলে তাঁরা নানান সময় হুমকি ধামকি দেন। তাই এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করতে পারি না। আমাদের উপজেলা পযার্য়ের কর্মকর্তাগণদের বিষয়টি জানিয়েছি। বটতৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, বুধবার সকালে বিষয়টি আমি দেখে এসেছি। চালকল মালিক পক্ষের সঙ্গে কথাও বলেছি বিষয়টি সমাধানের জন্য। তাঁরা দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের কুষ্টিয়ার উপপরিচালক আতাউর রহমান সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত নন। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি । কুষ্টিয়ার পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মিজানুল হক বলেন,আমাকে জানানোর সঙ্গে সঙ্গে আমি স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ উপজেলা পযার্য়ের কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। এতদিনে তারা কেউই ব্যবস্থা নেননি। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাধন কুমার বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডাক্তার এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমাকে কেউই জানাননি। খোঁজ নিয়েই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply