“ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে পদ প্রত্যাশী কুমারখালীর ছেলে সাগর”


কলেজ জীবনের প্রথম পর্যায় থেকেই তিনি জড়িত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে। নিজেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়ে তোলার শুরুটা তখন থেকেই। সরকারী বিজ্ঞান কলেজে পড়াকালীন সময়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পরেন।কলেজ শেষ করে ভর্তি হন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরিপূর্ণ রূপে ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের সূচনা সেখান থেকেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ থেকে তিনি ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। বলছি কুষ্টিয়া জেলার কুমরাখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের কামরুজ্জামান খান সাগরের কথা। বর্তমানে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ থেকেই ছাত্রলীগের প্রতি নিবেদিত প্রাণ হবার কারণে সিনিয়র নেতাদের নজর কারেন সাগর। সাংগঠনিক দক্ষতা এবং ছাত্র বান্ধব রাজনীতি করার কারণে ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের হয়ে উঠেন পরিচিত মুখ। তৎকালীন বিএনপি জামাত জোটের হরতাল অবরোধের মধ্যে রাস্তায় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছিলেন সক্রিয়। এর ফলাফল স্বরূপ ২য় বর্ষে থাকাকালীন সময়ে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মনোনীত হন। এরপর রাজনীতির মাঠে নিজেকে আরও শানিত হিসেবে গড়ে তোলেন।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাবেক আহ্বায়ক শামীম হোসেন খান বলেন, “আমি যখন আহ্বায়ক ছিলাম তখন থেকেই সাগরকে চিনি। প্রথম থেকেই ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী ছিল সে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সাদ্দাম হল থেকে শিবির-মুক্ত করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে।”
২০১৬ সালের মার্চে কর্মকর্তাদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিবেশ যখন মুখ থুবড়ে পরার উপক্রম হয়েছিল তখন সাধারণ ছাত্রদের নিয়ে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফেরানোর দাবীতে তিনি মাঠে নামেন। ২০১৬ সালে আওয়ামীলীগ ২য় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকলেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪টি ছাত্রহলের ১ টিতে ছাত্রলীগ বাদে বাকী ৩ টিতে নিয়ন্ত্রণ ছিল ছাত্র শিবিরের। এসময় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র শিবিরের ক্যান্টনমেন্ট নামে খ্যাত সাদ্দাম হোসেন হলে মাত্র ১৬ জন ছাত্রলীগ কর্মী নিয়ে সাগরের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ শিবিরের অনৈতিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ায়।আস্তে আস্ত হলে কর্মী সাংখ্যা বাড়তে থাকে।হল থেকে ইয়ানত নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিবিরের চাঁদাবাজি করা বন্ধ করে দেন সাগর। এভাবে তিনি সাদ্দাম হোসেন হলে সাধারণ ছাত্রদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করেন। তার নেতৃত্বে প্রথম বারের মত সাদ্দাম হলে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। তার এমন কার্যক্রমের পুরষ্কার স্বরূপ ২০১৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তাকে সাদ্দাম হোসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়।
সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হওয়ার পর প্রথমবারের মত সাদ্দাম হোসেন হলে সাগরই প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি লাগান। তিনি সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন অবস্থায় ছাত্রলীগের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সাদ্দাম হোসেন হল থেকে কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী শাহ আজিজুর রহমান এবং রাজাকার মতিউর রহমান নিজামীর নাম-ফলক ভেঙ্গে দেয়া হয়। ২০১৭ সালের ১৫ আগস্ট ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিবির-মুক্ত হবার আগে ১৩ আগস্ট সাগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় সাদ্দাম হল থেকে সশস্ত্র শিবির উৎখাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ঐদিন বিকালেই সাদ্দাম হোসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সমাবেশ সঞ্চালনা করে সাদ্দাম হলকে শিবির-মুক্ত ঘোষণা করেন। এভাবে তিনি নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একজন আদর্শ সৈনিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমি সভাপতি থাকাকালীন সময়ে সাগর সাদ্দাম হোসেন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিল। সে সাংগঠনিক ছেলে। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির প্রথম দিন থেকে সাগর আমাদের সাথে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। ছাত্রলীগের দুর্দিনে সে কখনো পিছপা হয়নি। শিবির বিরোধী অবস্থানের জন্য সে আমাদের মাঝে প্রশংসিত।”
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে বেশ সখ্যতা রয়েছে সাগরের। কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের
সাংগঠনিক সম্পাদক সালাহ্উদ্দীন খান তারেক বলেন, “সাগর আওয়ামী ঘরনা পরিবারের ছেলে। এলাকার সবাই তাকে ছাত্রলীগের নেতা হিসেবেই চিনে। সে তো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করে। তবে এলাকায় আসলে সে সবসময় আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকে।”
সাগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অঙ্গনকে পরিষ্কার রাখতে নিজে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই অভিযানে অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করেন। সামাজিক ও সহশিক্ষা কর্মকাণ্ডেও তার সমান দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি সরকারী বিজ্ঞান কলেজের বিজ্ঞান ক্লাবের গণিত অলিম্পিয়াডের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া সাগর সেফ দ্যা নেচার অফ বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অন্যতম সদস্য।
কামরুজ্জামান খান সাগর বলেন,” আমার স্বপ্নে লালিত প্রাণ প্রিয় সংগঠন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের জন্য আমি যা করেছি তা আমার একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ থেকে,সংগঠন যদি আমাকে আরও ভালো কিছু করার সুযোগ দেয় তাহলে নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে সংগঠনের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রেখে কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ।”
Leave a Reply